সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন
মোঃ মানিক মিয়া, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে সরকারী খুচরা সার বিক্রেতার ডিলার সার পাচার কালে স্থানীয় কৃষক-জনতা ৩৯ বস্তার সার আটক করেছেন। স্থানীয় সবিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের খুচরা সার বিক্রয় ডিলার সানোয়ার হোসেন ও ৯নং ওয়াডের ডিলার আশরাফুল যৌথ ভাবে লক্ষীপুর বাজার থেকে ৩৯ বস্তা সার পাচারকালে ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের পাশে কৃষক-জনতার সন্ধেহ হলে তারা সার বোঝাই ট্রলী আটক করে।এর পর স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও জামালগঞ্জ থানাতে জানানোর পর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও থানাপুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে ৩৯ বস্তা সার জব্দ করে স্থানীয় কৃষকের জিম্মায় রেখে আসেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় ওই দুইজন সার ডিলারের অনিয়ম ও সেচ্চাচারিতার কারণে কৃষকরা কয়েকবার ইউএনও ও স্থানীয় কৃষি বিভাগে লিখিত অভিযোগ করা হয়। ওই ডিলারদের চরম স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ওয়ার্ডেও ৩ গ্রামের প্রায় ১২’শ কৃষক তাদের জমিতে সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করতে পারেনি। এ কারণে কৃষকদের কৃষি কাজ অনেকটাই ব্যহত হবার চরম আশংকা দেখা দিয়েছে। ওই ডিলারের রিবুদ্ধে উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বাসিন্ধা কৃষক রহিছ উদ্দিন চৌধুরীসহ ২৭ জন কৃষক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন সুফল পাননি। সরকারী নীতিমালা অনুয়ায়ী ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ডেই কৃষকদের সুবিধার জন্য একজন করে খুচরা সার বিক্রয় ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্ত ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ডিলার সানোয়ার হোসন নিজের ওয়ার্ডে ডিলারী না করে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ৯নং ওয়ার্ডে লক্ষীপুর বাজারে খুচরা সার ডিলারী করছেন। এলাকায় গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে সার বিক্রয় ডিলার সানোয়ারের বাড়ি ৫নং ওয়ার্ডের শান্তিপুর গ্রামে হলেও তার নিজ গ্রাম ছেরে ৩ কিলোমিটার দুরে লক্ষীপুর বাজারে ডিলারসীপ করে ৯নং ওয়ার্ডের ডিলারের সঙ্গে যোগসাজস করে সার পাচার করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে। কি কারণে বা কার স্বার্থে পাশ^বর্র্তী বাজার সেলিমগঞ্জ বা নিজ ওয়ার্ড বাদ দিয়ে ৩ কিলোমিটার দূরে ৯নং ওয়ার্ডে লক্ষীপুর বাজারে ডিলারী করেন এমন প্রশ্নে কৃষক ও সূধী সমাজেরর মুখে মুখে শুনা যাচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ সময়মতো ওই ডিলারদেরকে না পাওয়ার কারণে সার ছাড়াই খালি হাতে বাড়িতে ফিরতে হয়েছে। এর পূর্বে গত ২৯.১১.১৭ তারিখ একই অভিযোগে ওয়ার্ডের খান মো: মোজাম্মেল হক ডিলার সানোয়ারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানান কৃষকরা।
স্থানীয় লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক জিয়া উদ্দীন বলেন, ভোর থেকেই কয়েক ট্রলী সার অন্য জায়গায় নিয়েছে। শেষের ট্রলিটি সন্ধেহ করে আটক করার পর ডিলারদেও খোঁজ পাওয়া যানি। তবে এক জন ডিলার একেক বার একেক কথা বলছে, আমাদেও ধারণা পাশর্^বর্তী (দিরাই উপজেলার) বাংলাবাজারে সারগুলো পাচার করছিলো। কৃষক টিটু রেজাউল করিম জানান, সার পাচারকালে জনতার হাতে আটক হয় পরে কৃষি বিভাগ ও পুলিশ এসে মালামাল জব্দ করে আমার জিম্মায় রাখা হয়েছে।
অভিযুক্ত সার ডিলার সানোয়ার হোসেন (০১৭১০০১২৭৬৬)-কে বার বার ফোন দিলে তিনি অন্যজন দিয়ে ফোন রিসিপ করিয়ে সময় ক্ষেপন করেন। অপর সার ডিলার আশরাফুল (০১৭১৩৮১০১৭৯)-কে কয়েক বার ফোন দিলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশেম বলেন, সার আটক করা হয়েছে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে আইনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ড. সাফায়েত আহম্মদ সীদ্দিকী বলেন, পূর্বেও কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছিলাম,
তবে ৩৯ বস্তা সার জব্দ করে স্থানীয় এক কৃষকের জিম্মায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।